Type Here to Get Search Results !

মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনী| Biography of Michael Madhusudan Dutta

মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনী| Biography of Michael Madhusudan Dutta

Table of Contents(toc)

মাইকেল মধুসূদন দত্ত-র জীবনী| Biography of Michael Madhusudan Dutta.

Michael Madhusudan Dutta| জন্ম 25 জানুয়ারি 1824 জন্মস্থান যশহরপি সাগরদাঁড়ি।রাজনারায়ণ দত্ত (বাবা)জাহ্নবীদেবী (মা)।দাম্পত্যসঙ্গী হেনরিতা সোফিয়া হোয়াইট।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত-র জীবনী| Biography of Michael madhusudan Dutta| Michael madhusudan Dutta biography in Bengali| Michael madhusudan Dutta biography| Bengali biography of Michael madhusudan Dutta| Michael Madhusudan Dutta biography.

 Michael madhusudan Dutta biography in Bengali

নাম (Name) মাইকেল মধুসূদন দত্ত (Michael Madhusudan Dutt)
জন্ম (Birthday) ২৫ শে জানুয়ারি ১৮২৪ (25 January 1824)
জন্মস্থান (BirthPlace) যশােহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে।
ছদ্দনাম (Pseudonym) টিমোথি পেনপোয়েম। (Timothy Penpoem)
Guardian) / পিতা ও মাতা রাজনারায়ণ দত্ত (বাবা) জাহ্নবীদেবী (মা) Rajnarayan Dutt (Father), Jahnavi Devi (Mother)
দাম্পত্যসঙ্গী (Spouse) হেনরিতা সোফিয়া হোয়াইট
পেশা (Career) কবি, নাট্যকার
সাহিত্য আন্দোলন (Literary movement) বাংলার নবজাগরণ (Bengal Renaissance)
মৃত্যু (Death) ২৯ শে জুন ১৮৭৩ (29th June 1873)
মৃত্যুস্থান আলিপুর-কলকাতার এক হাসপাতালে

মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী| Biography of Michael Madhusudan Dutta.

Michael Madhusudan Dutta|মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্মদিন 25 জানুয়ারি 1824 জন্মস্থান যশহরপি সাগরদাঁড়ি। ভালতা ও মাতা-রাজনারায়ণ দহনবীদেবী(মা)।দাম্পত্যসঙ্গী হেনরিতা সোফিয়া হোয়াইট।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান| Birthplace of Michael Madhusudan Dutta:

১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি যশােহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে কবি মধুসূদনের জন্ম। পিতা রাজনারায়ণ দত্ত যখন সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন তখন কবির বয়স সাত বছর। ১৮৩৩ সালে কবি হিন্দু কলেজের জুনিয়র। বিভাগের সর্বনিম্ন শ্রেণিতে ভরতি হন। এই হিন্দু কলেজে কবির | সহপাঠীদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলেন ভূদেব মুখােপাধ্যায়, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক প্রমুখ। এই সময়েই ইংরেজিতে মধুসূদনের কবিতা লেখা শুরু করেন। সেইসব কবিতা প্রকাশিত হত ‘জ্ঞানান্বেষণ’, ‘Bengal Spectator', Calcutta Literary Gazette ইত্যাদি পত্রিকায়। 

এই সময়ে মধুসূদন সম্পর্কে বন্ধু গৌরদাস যা লিখেছিলেন তার বাংলা তর্জমা হল—মধুসূদন ছিলেন নক্ষত্রদের মধ্যে বৃহস্পতি অর্থাৎ সবচেয়ে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের পরে হিন্দু কলেজ ছেড়ে মধুসূদনকে ভরতি হতে হয় বিশপস্ কলেজে। এখানেই কবি গ্রিক, লাতিন ও হিব্রু এবং তার সঙ্গে সংস্কৃত ভাষা শিক্ষার সুযােগ পান। এইসব ভাষাশিক্ষাই কবির মনে ক্রমশ এক ক্লাসিক জীবনবােধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বংশ পরিচয়| Michael Madhusudan Dutta:

শ্রীরামরাম দত্ত ছিলেন দত্ত বংশের প্রথম পুরুষ। এঁদের আদি নিবাস ছিল হাওড়ার বালিতে। পরবর্তীকালে তাঁরা বর্তমান বাংলাদেশের খুলনা জেলার তালা থানার অন্তর্গত গােপালপুরে চলে যান। এখন অবশ্য অঞ্চলটি সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্ভুক্ত। বংশের দ্বিতীয় পুরুষ শ্রীরামকিশাের দত্ত ছিলেন মধুসূদনের প্রপিতামহ। 

রামকিশােরের মৃত্যুর পর কবির পিতামহ রামনিধি দত্ত তাঁর অন্য ভাইদের নিয়ে সাগরদাঁড়ির মাতুলালয়ে চলে এসে এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে ওঠেন। রামনিধি দত্তের চার ছেলে রাধামােহন, মদনমােহন, দেবীপ্রসাদ ও রাজনারায়ণ । এই রাজনারায়ণই মধুসূদন দত্তের পিতা। মধুসূদনের মাতা জাহ্নবী দেবী ছিলেন জমিদার-কন্যা। তাঁর পিতার নাম গৌরীচরণ ঘােষ। গৌরীচরণ সাতক্ষীরার রাডুলি কাঠিপাড়ার জমিদার। তাঁর ভাই বংশীধর ঘােষ ছিলেন সংস্কৃতিমনস্ক উদার চরিত্রের মানুষ, যার প্রভাব কবির চরিত্রে দেখা যায়।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের শিক্ষাজীবন| Michael Madhusudan Dutta:

মা জাহ্নবী দেবীর তত্ত্বাবধানে মধুসূদন দত্তের প্রাথমিক বাল্যশিক্ষা শুরু হয়। তিনিই ছিলেন কবির প্রথম ও প্রধান শিক্ষক। তাঁর মুখ থেকে রামায়ণ, মহাভারত ও চণ্ডীমঙ্গলের কথা শুনে কবি বড়াে হতে থাকেন। চার-পাঁচ বছর বয়সে মধুসূদনকে গ্রাম্য পাঠশালায় ভরতি করা হয়। জানা যায়, কবির আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা হয় বাড়ির অনতিদূরে এক আরবি-ফারসি ভাষার সুপণ্ডিত, উদার ধর্মপরায়ণ মুসলমানের কাছে, যার নাম মৌলবি লুফুল হক। পরে এঁর কাছেই কবির ইংরেজি শিক্ষার শুরু।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত একাধারে ছিলেন বহু ভাষাবিদ। শিশু কালে গ্রামের টোল থেকে তার ফারসি ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে ভাষা শিক্ষার শুরু হয়। তিনি ইংরেজি ছাড়াও ল্যাটিন, গ্রিক, ফারসি, হিব্রু, তেলেগু, তামিল ইত্যাদি ভাষায় অনায়াসে কথা বলতে পারতেন। তিনি এমনকি ফারসি ও ইতালীয় ভাষায় কবিতাও লিখতে পারতেন। মাতৃভাষা ছাড়া তিনি আরো বারোটি ভাষা জানতেন।

মধুসূদন দত্তের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি হচ্ছে — অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণ উপখান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্যটি। চরিত্র-চিত্র হিসাবে : রাবণ, ইন্দ্রজিৎ, সীতা, সরমা, প্রমীলা প্রমুখ। তিনি তার কাব্যকে অষ্টধিক সর্গে বিভক্ত করেছেন এবং সংস্কার অলঙ্কারশাস্ত্র অনুযায়ী নগর, বন, উপবন, শৈল, সমুদ্র, প্রভাত, সন্ধ্যা, মন্ত্রণা প্রত্যাভির সমাবেশও করেছেন। কিন্তু সর্গান্তে তিনি নতুন ছন্দ ব্যবহার করেন নি, পরবর্তী সর্গকাথা আভাসিত করেন নি। 

মাইকেল মধুসূদন দত্তের কলকাতায় আগমন ও উচ্চশিক্ষা লাভ।Michael Madhusudan Dutta.

পিতার পেশাগত প্রয়ােজনে সাত বছর বয়সে মধুসূদন দত্ত ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি মধুসূদন কলকাতায় ফিরে আসেন।কলকাতায় আসেন এবং এখানেই স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেন। ভরতি হন হিন্দু স্কুলের জুনিয়ার ডিপার্টমেন্টের সর্বনিম্নশ্রেণিতে। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে খিদিরপুরের লালবাজার।গ্রামার স্কুলে ভরতি করা হয়। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি হিন্দু কলেজে ভরতি হন। কলেজে থাকাকালীন আবৃত্তির জন্য তিনি পুরস্কার পান এবং ১৮৪১ খ্রিস্টাব্দে জুনিয়ার বৃত্তি লাভ করে। সিনিয়ার বিভাগে ভরতি হন। ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে ‘স্ত্রী-শিক্ষা বিষয়ে ইংরেজিতে প্রবন্ধ লিখে স্বর্ণপদক লাভ করেন।১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করায় মধুসূদন হিন্দু কলেজে পড়বার অধিকার হারান। চলে আসেন বিশপস কলেজে। ক্ষুদ্ধ ও মর্মাহত পিতা মধুসূদনের ব্যয়ভার বন্ধ করে দেন। উদবেগ, ব্যাকুলতা, অনিশ্চয়তায় দিশেহারা মধুসূদন লেখাপড়া । বন্ধ করে চাকরির চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে কলকাতা ত্যাগ করে ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি মাদ্রাজ চলে যান।

এর তিন বছর পরে প্রকাশিত হয় মধুসূদনের প্রথম নাটক শর্মিষ্ঠা'। এরপর একে একে প্রকাশিত হতে থাকে ‘পদ্মাবতী’, কৃয়কুমারী’ ইত্যাদি নাটক এবং একেই কি বলে সভ্যতা?’, ‘বুড়াে সালিকের ঘাড়ে রোঁ'র মতাে কালজয়ী প্রহসন। একই সময়ে কবি হিসেবেও মধুসূদনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিলােত্তমাসম্ভব কাব্য’ (১৮৬০), “মেঘনাদবধ কাব্য (১৮৬১), ব্রজাঙ্গনা কাব্য’ (১৮৬১), বীরাঙ্গনা কাব্য’ (১৮৬২) বাংলা সাহিত্যে মধুসূদনের।যুগান্তকারী অবদান। ১৮৬৬ থেকে ফ্রান্সের ভার্সাই শহরে বসে কবি রচনা করেন তাঁর চতুর্দশপদী কবিতাবলী’।


এইসব কবিতায় প্রকাশিত হয় বাংলা দেশ আর এখানকার মানুষদের জন্য কবির। শ্রদ্ধা ও তাদের সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণে মনখারাপের অনুভূতি। মধুসূদনের কবিতায় পুরাণের নানা কাহিনি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনিই প্রথম বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহার শুরু করেন। মিলহীন পয়ারের মাধ্যমে বাংলা কবিতার নতুন চলন নিয়ে আসেন তিনি তার হাতেই বাংলা পত্রকাব্যের। সূচনা হয়। বাংলায় সনেটের পথপ্রদর্শকও তিনিই। তাই বাংলা। কবিতার ইতিহাসে মধুসূদন এক বৈপ্লবিক প্রতিভা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন। তার ছদ্মনাম ছিল টিমথি পেপােয়েম।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত(Michael Madhusudan Dutt)-এর উলেখযোগ্য রচনা:

 
1. The Captive Ladie ১৮৪৯ ইংরাজি কাব্য 
2. Visions of the Past  ১৮৪৯  ইংরাজি কাব্য।
3. তিলােত্তমাসম্ভব কাব্য  ১৮৬০ আখ্যানকাব্য
4. মেঘনাদবধ কাব্য  ১৮৬১  মহাকাব্য।
5. ব্রজাঙগনা কাব্য  ১৮৬১  গীতিকাব্য।
6. বীরাঙ্গনা কাব্য   ১৮৬২ পত্রকাব্য।
7. চতুর্দশপদী কবিতাবলী  ১৮৬৬  সনেট
8. শর্মিষ্ঠা  ১৮৫৯  পৌরাণিক নাটক।
9. পদ্মাবতী  ১৮৬০  পৌরাণিক নাটক।
10. কৃষ্ণকুমারী   ১৮৬১ ঐতিহাসিক নাটক।
11. মায়াকানন রূপক।  ১৮৭৩ নাটক
12. একেই কি বলে সভ্যতা?  ১৮৬০ প্রহসন।
13. বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ  ১৮৬০  প্রহসন।
14.হেক্টর বধ (অসমাপ্ত)    

মাইকেল মধুসূদন দত্তের কর্মজীবন| Biography of Michael Madhusudan Dutta.

খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের কারণে মধুসূদনকে পড়া ছেড়ে চাকরির সন্ধান করতে হয়। এ কারণেই তাঁর মাদ্রাজে গমন। সেখানে ‘মেল অরফ্যান অ্যাসাইলাম’-এ শিক্ষকতার চাকরি পান। একইসঙ্গে মাদ্রাজ সাকুলেটর পত্রিকার সহ-সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে Hindu Chronicle পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পান ও মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাই স্কুল বিভাগের শিক্ষকতার পদে নিযুক্ত হন। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে দৈনিক পত্রিকা Spectator-এর সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ফিরে জুনিয়ার পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে প্রধান কেরানির পদে চাকরি নেন। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে পুলিশ আদালতে দোভাষীর কাজও গ্রহণ করেন। 

১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে ব্যারিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যান, কিন্তু অর্থাভাবে পড়া সম্পূর্ণ করতে পারেননি। অর্থসাহায্যের জন্য ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগরের কাছে চিঠি লেখেন এবং তাঁর সাহায্যে পুনরায় ইংল্যান্ডে গিয়ে পড়া শুরু করেন। ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে অনেক বাধা কাটিয়ে মে মাসে হাইকোর্টে ব্যারিস্টারি করবার অনুমতি পান। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে ওকালতি ত্যাগ করে হাইকোর্টের প্রিভি কাউন্সিলের আপিলের অনুবাদ বিভাগে পরীক্ষকের পদে চাকরি নেন। ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে আবার আইন-ব্যাবসা শুরু করেন। ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে মধুসূদন । পঞকোটের (বর্তমান পুরুলিয়া জেলার) রাজার ম্যানেজার । পদে চাকরি নেন। কেউ কেউ বলেন, এটি ছিল রাজার আইন উপদেষ্টার পদ।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বৈবাহিক জীবন| Married life of Michael Madhusudan Dutta.

কথিত আছে, মধুসূদন দত্ত পিতার নির্বাচিত কন্যাকে বিবাহ করবেন না-বলে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন ও মাদ্রাজে চলে। যান। সেখানে এক নীলকর সাহেবের কন্যা রেবেকা টমসন। ম্যাকটাভিসের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৩১  জুলাই তাঁকে বিবাহ করেন। রেবেকার গর্ভে মধুকবির তিনটি  সন্তানের জন্ম হয়। তাদের মধ্যে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। এই বিবাহ স্থায়ী হয়নি। ফলে তিনি পরে দ্বিতীয়বার বিবাহ  করেন। এই স্ত্রী হলেন ফরাসি কন্যা এমিলিয়া হেনরিয়েটা সােফিয়া ইনিই কবির অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত সঙ্গে ছিলেন। হেনরিয়েটা তিন সন্তানের মা ছিলেন। দ্বিতীয় সন্তানের কৈশােরাবস্থাতেই তার মৃত্যু হয়।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাহিত্যসম্ভার|Michael Madhusudan Dutta.

মধুসূদন বাংলা সাহিত্যের মহাকবি-এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে বিখ্যাত পণ্ডিত, বহুভাষাবিদ ও কালজয়ী যুগস্রষ্টা— এক বর্ণময় ব্যক্তিত্ব। স্বতন্ত্র কবিসত্তার অধিকারী। মধুসূদন বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ও সনেটের প্রবর্তক। মধুসূদন বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাট্যকার, প্রহসন রচয়িতা ও পত্রকাব্যকার। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক ও আন্তর্জাতিক চেতনাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। তাঁকে উনিশ শতকের নবজাগরণের অগ্রদূত’-ও বলা হয়। যুগস্রষ্টা মধুসূদন সম্পর্কে-

বঙ্কিমচন্দ্র তাই যথার্থই বলেছেন- “এই প্রাচীন দেশে দুই সহস্র বৎসরের মধ্যে কবি একা জয়দেব গােস্বামী।জয়দেব গােস্বামীর পর শ্রীমধুসূদন। অবনতাবস্থায়ও বঙ্গমাতা রত্নপ্রসবিনী।কাল প্রসন্ন সুপবন বহিতেছে দেখিয়া জাতীয় পতাকা উড়াইয়া দাও তাহাতে নাম লেখাে শ্রীমধুসূদন’।” ইংরেজি ও বাংলা মিলিয়ে অতি অল্প সময়ে মধুসূদন বেশ কিছু কাব্য, নাটক ও প্রহসন লিখেছেন অবশ্য অনেক লেখা তিনি শেষ করে যেতে পারেননি। সমাপ্ত ও অসমাপ্ত মিলিয়ে তাঁর সৃষ্টিভাণ্ডার নিম্নরূপ-

কাব্য (ইংরেজি) : ১) 'The Captive Ladie' (১৮৪৯), ২) 'Vision of the Past' (১৮৪৯), ৩) 'Poems,(Other Poems' (বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত)।

কাব্য(বাংলা): (১) ‘তিলােত্তমাসম্ভব কাব্য’(১৮৬০), ১ ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ (দুই খণ্ডে ১৮৬১), ৩) ব্রজাঙ্গনা কাব্য (১৮৬১), (৪) বীরাঙ্গনা কাব্য (১৮৬২), ও ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ (১৮৬৬), (৬) ‘হেক্টরবধ’ (গদ্যকাব্য) (১৮৭১)।

নাটক: ১) শর্মিষ্ঠা’ (১৮৫৯), (২) ‘পদ্মাবতী’(১৮৬০), কৃয়কুমারী’ (১৮৬১), (৪) ‘মায়াকানন’ (১৮৭৪)।

প্রহসন: (১) একেই কি বলে সভ্যতা’ (১৮৬০), বুড় সালিকের ঘাড়ে রো’ (১৮৬০)।

নাট্যানুবাদ (ইংরেজি) : ১) ‘Ratnavali' (১৮৫৮), Sharmistha (১৮৫৯), ৩) “Nildarpan' (১৮৬০)।


অসম্পূর্ণ রচনা (বাংলা) : ‘সুভদ্রা’(নাট্যকাব্য), ‘রিজিয়া’ (নাটক), ব্রজাঙ্গনা’ (২য়), সিংহল বিজয়’ (কাব্য), দ্রৌপদীর স্বয়ম্ভর’, ‘মৎস্যগন্ধা', সুভদ্রাহরণ’, ‘পাণ্ডববিজয়’, ‘দুর্যোধনের মৃত্যু’, ‘বিষ না ধনুষ্ঠুণ’, ‘দেবদানবীয়ম’ (ব্যঙ্গকাব্য)।


বক্তিতা: "The Anglo Saxon and the Hindu' (১৮৫৪)।

মধুসূদন দত্তের সমসাময়িক যুগ|Michael Madhusudan Dutta

উনবিংশ শতাব্দী ছিল নবযুগের প্রস্তুতিকাল। কবি মধুসূদন দত্ত এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে স্বর্ণপ্রসূ সময়কালটিতে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, হিন্দুস্কুল, হিন্দু কলেজ ছিল প্রাচ্যবিদ্যার চর্চাস্থল তারপর স্কুল বুক সােসাইটি, দিগদর্শন, আত্মীয়সভা, ব্রাহ্রসমাজ, ধর্মসভা, সিপাহি বিদ্রোহ, নীলবিদ্রোহ চারিদিকে নবজাগরণের পালা সব কিছুর মধ্যেই নতন পথ, নতুন অর্থ, নতুন তাৎপর্যের সন্ধান। মধুসূদন দত্ত এই সময়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম ও সার্থক শিল্পী।

এই যুগের শিল্পচেতনার মূলবৈশিষ্ট্য হল— ধ্রুপদি সাহিত্যের অনুসরণ, অনুধ্যান ও তার নবমূল্যায়ন। (২) প্রগতিপথী জীবনদৃষ্টির প্রবর্তন। ৩) বিশ্ববীক্ষা। (৪) ঐহিকতা, অধ্যাত্মবাদের সঙ্গে দেহাত্মবাদের স্পষ্ট ও পূর্ণ স্বীকৃতি। ৫) ব্যক্তিস্বাধীনতা ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা। জাতীয়তা ও আন্তর্জাতিকতার উ দবােধন। ৭) নৈয়ায়িকতা, যৌক্তিকতা ও বৈজ্ঞানিক মানসিকতার প্রতি অনুরাগ। ৮) যাবতীয় বন্ধন থেকে মুক্তি। ৯) বিশ্বজনীন সত্য ও সৌন্দর্যের সম্মান।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের গুনীজন সান্নিধ্য|Michael Madhusudan Dutta.

মধুসূদন তাঁর শিক্ষাজীবনে বহু পণ্ডিত ও গুণীজনের সংস্পর্শে আসেন। এইসব মানুষের মধ্যে ছিলেন ড. সুরেশ মৈত্র, ক্যাপটেন রিচার্ডসন, রিজ, হালফোর্ড, ক্লিন্ট, মিস্টার জোনস, রামচন্দ্র মিত্র, রামতনু লাহিড়ী প্রমুখ।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের বন্ধুবৃত।Michael Madhusudan Dutta.

মধুসূদনের সবচেয়ে বড়াে উপকারী এবং বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে মহান’ সুহৃদ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। এ ছাড়াও মধুসূদনের নিবিড় সান্নিধ্য ছিল ভূদেব মুখােপাধ্যায়, গৌরদাস বসাক ও রাজনারায়ণ বসুর সঙ্গে। তাঁর আরও কয়েকজন বন্ধু হলেন-বন্ধুবিহারী দত্ত, শ্যামাচরণ, মাধব মিত্র, গিরিশচন্দ্র ঘােষ, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবনারায়ণ, কিশােরীচাঁদ মিত্র, ক্ষেত্রমােহন দত্ত, যতীন্দ্রমােহন ঠাকুর, চার্লস অ্যালবার্ট কেনেট, জর্জ ম্যান, রবার্ট চার্লস ওয়াকার, জাইলস হােয়াইট, হেনরি ফেনরিক, মি. নটন, মি. সেলাফেল্ট প্রমুখ।


মাইকেল মধুসূদন দত্তের শেষজীবন|Michael Madhusudan Dutta

ব্যারিস্টার মধুসূদনের আশানুরূপ উপার্জন হল না পাল্লা দিয়ে চলতে লাগল অমিতব্যয়িতা। তীব্র অর্থকষ্টে ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে একাধিক লেখা অসমাপ্ত রেখেই কবি শয্যা নিলেন। হেনরিয়েটাও অসুস্থ। অবশেযে চরম আঘাত। দুঃখ-সুখের স্বপ্নবন্ধন ছিন্ন হল। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুন হেনরিয়েটা লােকান্তরিত হলেন। পত্নীর মৃত্যুসংবাদ এল। এদিকে আলিপুর চিকিৎসালয়ে কবিও মৃত্যুর পদধ্বনি শুনছেন চোখের কোণে জল। কবি উচ্চারণ করলেন : "Out, Out - brief candle/Life is but a walking shadow." ‘ম্যাকবেথ’ আর ‘মধুসূদন’ হয়ে উঠলেন এক অভিন্ন সত্তা।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের শেষকথা| Michael Madhusudan Dutta

প্রিয় পত্নীর মৃত্যুর তিনদিন পর বন্ধুর হাত ধরে কবি শেষবারের মতাে উচ্চারণ করলেন, "You see, Monu, my days are numbered, my hours are numbered, even my  minutes are numbered." এল সেই অন্তিম মুহূর্ত। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে ২৯ জুন, দুপুর দুটোয় কবির জীবনদীপ নির্বাপিত হল। মধুকবি মধুসূদন অমরলােকে যাত্রা করলেন।

জীবনাবসান: ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুন মধুকবি মারা যান।


Today Gk All Exams- পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের এই ব্লগ ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি কে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। Today Gk All Exams- আপনাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং বাছাই করা প্রশ্ন উত্তর সহ মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনী নিয়ে এসেছি। আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের লেগেছে এবং যদি আমাদের এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের উপকারে লাগে তাহলে এই ব্লগ সাইট টিকে অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করবেন পাশের নীলঘন্টা টি প্রেস করে এবং আমাদের ওয়েবসাইটটিতে অবশ্যই আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের কাছে শেয়ার করবেন, ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আনন্দে থাকবেন সতর্ক থাকবেন, ধন্যবাদ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.